OrdinaryITPostAd

ফাইবার কি? ফাইবার থেকে টাকা আয় করার সঠিক পদ্ধতি

 বর্তমানে অনলাইনে আয় করার সবচেয়ে জনপ্রিয় মাধ্যমগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো ফাইবার (Fiverr)

বিশেষ করে যারা ফ্রিল্যান্সিং পেশায় নিজেদের ক্যারিয়ার গড়তে চান, তাদের জন্য এটি একটি আদর্শ প্ল্যাটফর্ম।

ফাইবার এমন একটি মার্কেটপ্লেস যেখানে ঘরে বসেই আপনি আপনার দক্ষতা অনুযায়ী কাজ করতে পারেন এবং আয় করতে পারেন বৈদেশিক মুদ্রায়।


এই লেখাটিতে আপনি বিস্তারিতভাবে জানতে পারবেন—

  • ফাইবার কী?

  • ফাইবার থেকে আয় করার জন্য কীভাবে কাজ শিখবেন,

  • কীভাবে গিগ তৈরি করবেন,

  • ফাইবারে কীভাবে সফল হবেন এবং

  • মোবাইল দিয়েও কীভাবে ফাইবারে কাজ করা যায়।


 ফাইবার কি? (What is Fiverr in Bangla)


Fiverr একটি আন্তর্জাতিক ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস, যেখানে ফ্রিল্যান্সাররা তাদের দক্ষতা অনুযায়ী গিগ তৈরি করে রাখে।



তারপর বায়াররা সেই গিগ দেখে তাদের প্রয়োজন অনুযায়ী ফ্রিল্যান্সার বেছে নেন এবং কাজ দেন।

এখানে মূলত ছোট-বড় বিভিন্ন ধরনের কাজের অফার থাকে, যার ন্যূনতম মূল্য $5 থেকে শুরু হয়।

তবে এখন বেশিরভাগ কাজের মূল্য $10, $20 কিংবা $100+ পর্যন্ত হয়ে থাকে।


 উদাহরণস্বরূপ:

  • কেউ লোগো ডিজাইন করে $30 নিচ্ছে

  • আবার কেউ ওয়েবসাইট তৈরি করে $200+ আয় করছে


 ফাইবার থেকে আয় করার জন্য কী ধরনের কাজ জানতে হবে?


ফাইবারে অসংখ্য রকমের কাজ পাওয়া যায়।  বিভিন্ন ধরনের কাজ  ক্লাইন্টরা ফ্রিল্যান্সারদের  দিয়ে করিয়ে থাকে।

ফাইবারে শতাধিক ক্যাটাগরিতে কাজ পাওয়া যায়।

আপনি যদি যেকোনো একটি কাজ ভালোভাবে শিখে ফেলেন, তাহলে আপনিও আয় শুরু করতে পারবেন।


 সবচেয়ে চাহিদাসম্পন্ন কাজগুলো হল:

  •  ডাটা এন্ট্রি

  •  গ্রাফিক্স ডিজাইন

  •  ওয়েব ডিজাইন ও ডেভেলপমেন্ট

  •  ডিজিটাল মার্কেটিং

  •  এসইও (SEO)

  •  ভিডিও এডিটিং

  •  ইমেইল মার্কেটিং

  •  ডাটা মাইনিং

  • অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং

এই কাজগুলো আপনি চাইলে ইউটিউব, কোর্স ওয়েবসাইট কিংবা লোকাল ইনস্টিটিউট থেকে ২-৩ মাসের মধ্যে শিখে ফেলতে পারেন।


ফাইবার গিগ (Gig) কী?


Gig হচ্ছে সেই সার্ভিস বা সেবা যা আপনি ফাইবারে প্রদান করবেন। এটি একপ্রকার বিজ্ঞাপন, যা আপনি বায়ারদের দেখানোর জন্য তৈরি করেন।

একটি গিগে থাকে:

  • আপনার অফার করা কাজের বিবরণ

  • কাজের মূল্য

  • সময়সীমা

  • পোর্টফোলিও

  • FAQ (প্রশ্ন-উত্তর)

  • গিগ ইমেজ ও ভিডিও

আপনার গিগ যত বেশি পেশাদার ও আকর্ষণীয় হবে, বায়ার তত সহজে আকৃষ্ট হবেন।


 ফাইবারে কিভাবে একাউন্ট খুলবেন?


ফাইবারে একাউন্ট খোলা অত্যন্ত সহজ। ফাইবারে কিভাবে একাউন্ট খুলবেন তার অনেক ভিডিও ইউটিউবে পেয়ে যাবে।

ফাইবারে কাজ করতে হলে প্রথমেই একটি সেলার একাউন্ট খুলতে হবে।

নিচে ধাপে ধাপে নির্দেশনা দেওয়া হলো:

 ধাপ ১:

 Fiverr.com এ যান
  “Join” বাটনে ক্লিক করে একটি একাউন্ট তৈরি করুন

 ধাপ ২:

 আপনার ইমেইল ভেরিফাই করুন
ফাইবারের প্রোফাইল ১০০% পূর্ণ করুন:

  • Full Name

  • Profile Picture

  • Short Bio

  • Skills

  • Education

  • Certification (যদি থাকে)

ধাপ ৩:

 "Become a Seller" অপশন ক্লিক করে আপনার সেলার প্রোফাইল সম্পূর্ণ করুন

 ধাপ ৪:

 আপনার প্রথম Gig তৈরি করুন


গিগ তৈরির জন্য কী কী বিষয় থাকতে হবে?



ফাইবার মার্কেটপ্লেসে গিগ তৈরি করার জন্য বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে জানা জরুরী। 


সঠিকভাবে গিগ তৈরি করতে পারলে অর্ডার পাওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি।


একটি সফল গিগ তৈরির জন্য নিচের বিষয়গুলো খুব গুরুত্বপূর্ণ:


  1. ইউনিক ও স্পষ্ট টাইটেল

  2. সঠিক ক্যাটাগরি ও ট্যাগ

  3. প্রাইসিং: Basic, Standard, Premium

  4. বিস্তারিত গিগ ডেসক্রিপশন

  5. ছবি ও ভিডিও: আকর্ষণীয় ও প্রফেশনাল

  6. FAQ (Frequently Asked Questions)

  7. পোর্টফোলিও PDF যুক্ত করুন

 টিপস: গিগ তৈরির সময় আপনার টার্গেট কিওয়ার্ড যেন টাইটেল, ট্যাগ এবং ডেসক্রিপশনে থাকে।


ফাইবারে একজন ফ্রিল্যান্সার কয়টি গিগ খুলতে পারে?


যেহেতু ফাইবারে বহু ফ্রিল্যান্সাররা দীর্ঘদিন যাবত কাজ করে আসছে।  সেহেতু তাদের অনেক অভিজ্ঞতা রয়েছে।

নতুনদের জন্য ফাইবারে সর্বোচ্চ ৭টি গিগ খোলার সুযোগ থাকে।

কিন্তু লেভেল-১ বা লেভেল-২ সেলার হলে আপনি সর্বোচ্চ ২০টি গিগ পর্যন্ত খুলতে পারবেন।


ফাইবারে কাজ পাওয়ার কৌশল


ফাইবার হল অনলাইন মার্কেটপ্লেস। এই মার্কেট প্লেসে কাজ পাওয়া কঠিন।

তবে কিছু কৌশল অবলম্বন করলে সহজে কাজ পাওয়া যায়।

ফাইবারে কাজ পেতে হলে কিছু কৌশল অনুসরণ করতে হবে:


  1. আপনার কাজ ভালোভাবে শিখুন

  2. গিগ তৈরি করুন SEO অনুযায়ী

  3. প্রতিদিন Fiverr-এ Active থাকুন

  4. বায়ার রিকোয়েস্টে নিয়মিত বিড করুন

  5. রেসপন্স টাইম কম রাখুন

  6. গিগের রেটিং বজায় রাখুন (৫/৫)

  7. কাস্টমার সাপোর্টে মনোযোগী হন


ফাইবার থেকে মাসে কত আয় করা যায়?


আপনার দক্ষতা ও সময়ের উপর নির্ভর করে আপনার আয় নির্ধারিত হবে।

উদাহরণ:

  • আপনি যদি প্রতি গিগে $30 পান এবং মাসে ১০টি কাজ পান = $300 (~৳৩৩,০০০)

  • আপনি যদি ওয়েব ডিজাইনার হন এবং প্রতি গিগে $200 পান, মাসে ১০টি কাজ = $2000 (~৳২,২০,০০০)

এখানে লক্ষণীয় বিষয় হলো— যত ভালো গিগ, তত বেশি আয়।


ফাইবারে মোবাইল দিয়ে কাজ করা কি সম্ভব?


হ্যাঁ, মোবাইল দিয়েও ফাইবারে কাজ করা সম্ভব। বিশেষ করে ছোট কাজ যেমন:

  • ডাটা এন্ট্রি

  • ইমেইল টাইপিং

  • রিপোর্ট বানানো

  • ছোট গ্রাফিক্স ডিজাইন

আপনি চাইলে Fiverr Mobile App ব্যবহার করে গিগ তৈরি, বায়ারের ম্যাসেজ রিপ্লাই, অর্ডার ম্যানেজমেন্ট—সবই করতে পারবেন।

তবে বড় কাজের জন্য ডেস্কটপ বা ল্যাপটপ ব্যবহার করাই উত্তম।


ফাইবার থেকে আয়কৃত টাকা কিভাবে উঠাবেন?


আপনি সহজে ফাইবার থেকে টাকা তুলতে পারবেন। Fiverr থেকে টাকা তুলতে হলে আপনাকে Payoneer একাউন্ট খুলতে হবে।

আপনার আয় Payoneer-এ যাবে, সেখান থেকে আপনি সরাসরি:


  • বাংলাদেশের ব্যাংকে ট্রান্সফার করতে পারবেন

  • অথবা বিকাশ (bKash) এর মাধ্যমে তুলতে পারবেন (Payoneer to bKash)


ফাইবারের চার্জ কত?


ফাইবার মার্কেটপ্লেসে কাজ করে টাকা তোলার সময় কিছু পরিমাণ চার্জ কেটে নেয়।

ফাইবার আপনার  কাজ থেকে প্রতিটি আয় থেকে ২০% ফি কেটে নেয়।

যেমন: আপনি যদি $100 আয় করেন, তাহলে আপনি পাবেন $80।


তবে এটি কোনো সমস্যা নয়, কারণ Fiverr আপনার কাজ এনে দিচ্ছে, মার্কেটিং করছে এবং নিরাপদ পেমেন্ট গ্যারান্টি দিচ্ছে।


উপসংহার: ফাইবার থেকে টাকা আয়


ফাইবার একটি বিশ্বস্ত এবং সফল ফ্রিল্যান্সিং প্ল্যাটফর্ম। যদি আপনি যেকোনো একটি কাজে দক্ষ হন এবং Fiverr-এ প্রোফেশনালি গিগ তৈরি করতে পারেন,

তাহলে ঘরে বসেই মাসে হাজার হাজার টাকা আয় করা সম্ভব।

আপনি যদি ধারাবাহিকভাবে কাজ করেন, তাহলে আপনার ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ারে Fiverr হতে পারে আপনার সবচেয়ে বড় উপার্জনের উৎস

ধৈর্য ধরে কাজ করতে পারলে সফলতা আসবে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ১

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ২

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৩

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৪